নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট নেট : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪ তম প্রয়াণ দিবসে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ২৭ শে আগষ্ট বিকেল ৫ টায় ২নং রেল গেইটস্থ বাসদ কার্যালয়ে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক প্রদীপ সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক ও চারণের কেন্দ্রীয় ইনচার্জ নিখিল দাস, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এড. জাহিদুল হক দীপু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সুলতানা আক্তার, চারণের সংগঠক সেলিম আলাদীন প্রমূখ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, ২৭ আগস্ট বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪ তম প্রয়াণ দিবস। তিনি আমাদের দেশের জাতীয় কবি। তাঁর উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থ, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ছোটগল্প, নাটক, গান বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি এনেছে। রবীন্দ্রউত্তর বাংলা সাহিত্যে তিনি ভিন্ন ধারা নিয়ে আসেন। তিনি বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে তৎকালীন ভারতবাসীদের মুক্তির জন্য লেখনি ধারণ করেছিলেন। ১৯২২ সালে তার ‘ভাঙার গান’ কাব্যগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করেন ইংরেজ সরকার। তিনি যেমন লেখনি ধারণ করেছেন তেমনি আবার রাজপথের সংগ্রামে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন। সেজন্য তাকে জেলখাটাসহ নানা নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য আজ দেশের স্বাধীন সরকার দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিদেশী তথা সাম্রাজ্রবাদী কোম্পানীদের হাতে তুলে দিয়েছে। দেশের একদল পুঁজিপতি বিদেশে অর্থ পাচার করছে, সেকেন্ডহোম তৈরি করছে। নজরূল সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লিখেছেন ও লড়াই করেছেন। অথচ আজকে আমরা দেখি রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সাম্প্রদায়িকতাকে পৃষ্টপোষকতা করা হচ্ছে।
হেফাজতের কথায় পাঠ্যপুস্তক থেকে প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের লেখা বাদ দেয়া হয়েছে। ১৯২৬ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে নজরুল ‘মন্দির মসজিদ’ প্রবন্ধ লিখেছেন। আজও সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীদের হিংস্র আক্রমণে রামুর ঘরবাড়ি জ্বলতে থাকে, বাউলরা আক্রান্ত হয়। নজরুল সাম্য চেয়েছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লিখেছেন। আজও আমাদের সমাজে-দেশের শোষকের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছে অসংখ্য শ্রমিক। শ্রমিক ছাঁটাই প্রাপ্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই আজ কবি নজরুলের চেতনা ধারন করে পুঁজিবাদী শোষণমূলক সমাজব্যবস্থাকে পরির্বতন করে শোষণহীন সমাজব্যবস্থা নির্মাণের সংগ্রাামকে এগিয়ে নিতে হবে।
আলোচনাসভা শেষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা এবং উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি সুজয় রায় চৌধুরী বিকু সংগীত পরিবেশন করেন।