নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বড় ছেলের বউয়ের দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় শ^শুর ও দেবরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গত রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। তবে আসামীদের পরিবারের দাবি ষড়যন্ত্রমূলক ছেলের বউ মিথ্যা মামলা দিয়েছে শ্বশুর, দেবর ও ননদের বিরুদ্ধে।
২০২২ সালে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকার আব্দুল মোতালিব, তার দুই ছেলে মাহবুব আলম ও আফজাল হোসেন, মেয়ে মোকসেদা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে আব্দুল মোতালেবের বড় ছেলে মোক্তার হোসেনের বউ শরিফা জাহান ঝর্ণা। সে একই এলাকার আবুল কালামের মেয়ে। উক্ত মামলায় দীর্ঘদিন জামিনে থেকে আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিলেন বিবাদীরা।
আব্দুল মোতালেবের পরিবার ও শরিফা জাহান ঝর্ণার শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানান, তাদের বড় বউয়ের দায়ের করা মামলাটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক। শরিফা জাহান ঝর্ণার বেপরোয়া চলাফেরা ও বাইরে অবাধ যাতায়াতের বিষয়ে পারিবারিকভাবে বাধা দিলে কথা কাটাকাটির জের ধরে হিংসা পরায়ণ হয়ে প্রতিশোধমূলক এমন ঘৃণিত অভিযোগ এনে মামলা দিয়েছে। এ ঘটনায় ঝর্ণা থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বিচার-শালিসের মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দিলেও সে সমাজ ও পরিবারের কারো কথায় কর্ণপাত না করে আদালতে গিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা দায়ের করেছে।
আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, বড় ছেলে মোক্তার আমাদের সংসার খরচ তিন হাজার করে টাকা দেয়। তাও প্রতিমাসে দেয় না। দুই-তিন মাস পর পর দেয়। তাছাড়া ঝর্ণার চলাফেরা নিয়েও আপত্তি জানালে এবং ছেলের দেওয়া সংসার খরছের বিষয়ে আমার স্বামী জিজ্ঞেস করাতে ছেলের বউয়ের সাথে শ্বশুরের কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরেই সে মামলা দেয়।
ছোট ছেলে আফজাল হোসেনের বউ বলেন, আমার শ্বশুর- শ্বাশুড়ি খারাপ মানসিকতার লোক না। বড় ধরণের কোন মারামারি বা হাতাহাতির কোন ঘটনাই ঘটেনি। তাছাড়া আমার স্বামীও বাসায় ছিল না। ঝর্ণা তার স্বামী দেশে থাকা অবস্থায়ও বেপরোয়া চলাফেরা করতো। সে তার স্বামীকেও কোন পাত্তা দেয়না। সে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
প্রতিবেশীরা বলেন, মেয়েটার (ঝর্ণা) চলাচল ভালো না লাগাতে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ডাক-দোহাই দিয়েছে। এছাড়া সাংসারিকভাবে তাকে কোন জালাতন করতে দেখিনি। সে শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে মিথ্যা অভিযোগে হয়রানি করছে। তার বাবার বাড়ি কাছে, তাই কিছু হলেই বাপের বাড়ি চলে যায়। তার চলাফেরাও ভালোনা। আব্দুল মোতালিবের আরো তিন ছেলের বউ আছে। তাদের সাথে কখনও ঝামেলা বা খারাপ কোন মন্তব্য শুনিনি। তাদের কারো কোন অভিযোগ কখনও পাইনি।
অন্যদিকে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শরিফা জাহান ঝর্ণা নামে-বেনামে একাধিক ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে। যুবকদের আকর্ষিত করতে এসব আইডিতে সে প্রায়ই নিজের ছবি পোস্ট করে থাকে। এভাবে সে বিভিন্ন পর-পুরুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। এসব কথা শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানতে পেরে ঝর্ণার এমন বেপরোয়া চলাফেরায় বাধা দেয়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে শরিফা জাহান ঝর্ণা।