নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে নির্বাচনী তফসিল বাতিল, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দমন-পীড়ন- গণগ্রেফতার বন্ধ ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবিতে বুধবার ৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টির জেলার সম্পাদক ম-লীর সদস্য আব্দুল হাই শরীফ, বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদ, সিপিবি নেতা দুলাল সাহা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের ৩৩ বছর আজ। ৮,৭ ও ৫ দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে সামরিক জান্তা এরশাদের পতন হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০। এরশাদের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এরশাদ পতনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ এর নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে ১১ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ৭ টি দলীয় ও ৪ টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৪ টি নির্বাচনে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে। দলীয় সরকারের অধীনে প্রত্যেকটি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ কারচুপীর নির্বাচন হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সরকার চরম ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। বিরোধী নেতা- কর্মীদের গ্রেফতার, হামলা, মামলা দিয়ে দেশে একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছে বর্তমান আওয়ামী সরকার। আওয়ামী সরকারের অধীনে গত দুটি নির্বাচন ভোটারবিহীন ও দিনের ভোট রাতে করে প্রমাণ করেছে তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচনে তার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। সেজন্য তারা দলীয় সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন চায়। ১৫ নভেম্বর সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন জনতার দাবি উপেক্ষা করে এতরফা নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করেছে। ক্রিয়াশীল বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার একতরফা নির্বাচনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে তাতে দেশের বর্তমান সংকট নিরসনের পরিবর্তে আরো ঘনীভূত হচ্ছে। বাস্তবে সরকারের একগুয়েমী দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনতার আন্দোলনের মুখে এরশাদ স্বৈরাচারের মতো করে বর্তমান আওয়ামী সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।