নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : কমরেড সুনীল রায়ের ২২ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে তাঁর স্মৃতিসৌধ মাসদার মহাশ্মশানে ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ৮টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড হাফিজুল ইসলাম।
আলোচনা করেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা কমরেড লক্ষ্মী চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড আবদুল্লাহ আল কাফী রতন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড এ্যডভোকেট মন্টু ঘোষ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ এর কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড নিখিল দাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শিবনাথ চক্রবর্তী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য কমরেড দুলাল সাহা, জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড বিমল কান্তি দাস, সমমনা’র সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ চন্দ্র সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল প্রমুখ।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, কমরেড সুনীল রায় নারায়ণগঞ্জ জেলার গোদনাইলে চিত্তরঞ্জন কটন মিলের একজন শ্রমিক ছিলেন। তাঁর মামা ছিলেন ঐ মিলের কর্মকর্তা। তিনি অল্প বয়সে শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির সাথে পরিচয় হয়। কমিউনিস্ট পার্টির আদর্শ-উদ্দেশ্য তাঁর ভালো লেগে যায় এবং কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। তখন ছিল ব্রিটিশ আমল। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সাথেও যুক্ত হন। জীবনের ২০ বছর জেলে ও আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে। এ কারণে বিয়ে বা ঘর-সংসার আর করতে পারেননি। তিনি ছিলেন চিরকুমার। পাকিস্তান আমলে সিদ্ধিরগঞ্জ-গোদনাইল ও আদমজী শিল্পাঞ্চলে কমরেড সুনীল রায় ছিলেন শ্রমিকদের প্রিয় নেতা। এর আগে ১৯৩৮ সাল থেকে চিত্তরঞ্জন কটন মিলের শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টিরও নেতা ছিলেন। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। এ অঞ্চলে শত শত যুবককে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরে এ অঞ্চলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাকর্মীদের নেতা ছিলেন তিনি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, কমরেড সুনীল রায় কৈশোরে যে লড়াই শুরু করেছিলেন ২০০১ সালে ১০ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার ইতি টানেন। এক জীবনে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পর্বে বিপ্লবী ধারার শ্রমিক আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও আজীবন কমিউনিস্ট আন্দোলনের একজন আপোষহীন সৈনিক ছিলেন। তিনি ছিলেন এদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনে উদাহরণ, এক আজীবন বিপ্লবী। শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাঁর স্বপ্ন ও জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
আলোচনা সভা শুরুর আগে সকাল আটটায় সুনীল রায়ের প্রয়াণ দিবসে তাঁর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি, নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটি, সমমনা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ
গার্মেন্ট ও সোয়েটার ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, খেলাঘর, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।