8 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ ০৯-১২-২০২২
Home / প্রতিবেদন / সুনামগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন বোনকে খুন, ঘাতক ভাই গ্রেফতার

সুনামগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন বোনকে খুন, ঘাতক ভাই গ্রেফতার

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট :  সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার আলোচিত স্কুল ছাত্রী ইজা বেগম ইভা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিকল্পনাকারী নিহত ইভার আপন বড় ভাই রবিউল হাসান (২০)। গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে খুন করার কথা স্বীকার করে ঘাতক ভাই রবিউল। ভিকটিম ইভা দক্ষিণ কূর্শী গ্রামের মোশাহিদ আলীর মেয়ে ও দক্ষিণ কূর্শি পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

সোমবার ৯ অক্টোবর আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে আসামী রবিউল হাসান। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে মুঠোফোনের এমবি কার্ড কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় ইজা। নিখোঁজের কয়েক ঘণ্টা পর গ্রামের রাস্তার পাশে ধান খেতে ইভার মাথাবিহীন লাশ দেখতে পায় গ্রামবাসী। পরে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গত শনিবার নিহতের বাবা মোশাহিদ আলী বাদী হয়ে ছাতক থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বোনের হত্যাকারী রবিউল হাসান উপজেলার দোলারবাজার দক্ষিণ কূর্শি গ্রামের খালেদ হত্যা মামলার আসামি। একই মামলার অপর দুই আসামি ওই গ্রামের আক্কেল মিয়া ও হোসেন আলী দীর্ঘদিন একসঙ্গে হাজতে ছিলা সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে খালেদ হত্যা মামলার বাদী আহমেদ আলী ও তার পরিবারকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে তারা। তাদের ধারণা ছিল অপর একটি হত্যা মামলায় বাদীকে ফাঁসিয়ে দিতে পারলে উভয় মামলা আপোষে নিষ্পত্তি হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, রবিউলের দুই বোনের মধ্যে যেকোনো একজনকে খুন করার পরিকল্পনা করে তারা। ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে মোবাইলের এমবি কার্ড আনার জন্য ২০ টাকা ও আইসক্রিম খাওয়ার জন্য আরও ১০ টাকা দিয়ে বোনকে গ্রামের একটি দোকানে পাঠায় রবিউল। সেখানে রাস্তার পাশে একটি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে আগে থেকেই ওৎপেতে থাকা তার সহযোগীরা ঝাপটে ধরে ইভাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে কূর্শি-সিরাজগঞ্জ রাস্তার পাশে নিয়ে একটি পলিথিনের উপর ফেলে ইভার মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দেয় ঘাতকরা। সঙ্গী দুজন ইভার হাতপা শক্ত করে ধরে রাখে এবং ভাই রবিউল রামদা দিয়ে পর পর দুটি কোপ দেয়। এতে ইভার দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে যায়। পরে রাস্তার পাশের একটি জমিতে মাথা এবং রাস্তা সংলগ্ন জমিতে ইভার লাশ ফেলে চলে যায় খুনিরা।

সুনামগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক সার্কেল) রনজয় চন্দ্র মল্লিক জানান, হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইভার পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেন তিনি। তাদের মধ্যে রবিউলের কথাবার্তা ছিল অনেকটাই অসঙ্গতিপূর্ণ। এ সময় তিনি হত্যার রহস্য উন্মোচন ও খুনিদের শনাক্ত করতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। ইভার বাড়িতে নিয়মিত পুলিশ প্রহরা দিয়ে পরিবারের লোকজনের ওপর নজর রাখতে নির্দেশ দেন তিনি। শুক্রবার মামলা দায়েরের কথা বলে ইভার মা-বাবা ও ভাই রবিউলকে থানায় নিয়ে আসেন। রাত থেকেই তাদের পৃথক জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে পুলিশ। এক পর্যায়ে শনিবার ইভাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আসামি রবিউল। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বোন ইভাকে খুন করেছে বলে জানায় সে। এ সময় ইভা খুনের লোমহর্ষক কাহিনী বলে দেয়। পরে রবিউলের দেওয়া তথ্যমতে ইভার মাথা খেতের জমি থেকে উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন...

হাজীগঞ্জে শিশু বলাৎকার মাদ্রাসা শিক্ষক কারাগারে

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মো. ইসমাঈল হোসাইন (২৫) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের …