নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট নেট : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে গত শনিবার সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন সমাবেশ ও পওে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ফোরামের সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ পাগলা আঞ্চলিক শাখার সমন্বয়ক এস এম কাদির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সুলতানা আক্তার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠক প্রদীপ সরকার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৫ মার্চ হেফাজত নেতা মামুনুল হক এর একটি সাম্প্রদায়িক উসকানীমূলক বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে এক সনাতন ধর্মাবলম্বি যুবক স্ট্যাটাস দেয়। মঙ্গলবার ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে। এরপরও ১৭ মার্চ মামুনুলের অনুসারী হেফাজতের ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ধারাই নদর তীরে সমবেত হয়ে মিছিল করে লাঠিসোটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িতে এবং মন্দিরে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনা থানা পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশ বিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং দুষ্কৃতিকারীদের নির্বিঘেœ চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। ফলে ওই হামলার দায় সুনামগঞ্জের সিভিল ও পুলিশ প্রশাসন এবং সরকার কোনমতেই এড়াতে পারে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তচিন্তার মানুষ, সাংবাদিকসহ জনসাধারণ সরকারের দুর্নীতি-দুঃশাসন-লুটপাটের সমালোচনা করলে, পত্রিকায় বা সামাজিক মাধ্যমে বক্তব্য দিলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিনা বিচারে কারাগারে বন্দি রাখা হয়। নির্যাতনের পর চিকিৎসা না পাওয়ায় কারাগারে লেখক মুশতাককে জীবন দিতে হয়েছে। কার্টুনিস্ট কিশোর নির্যাতনের ফলে প্রায় বধির ও পঙ্গু হয়ে যায়। অথচ ওই ধর্মান্ধ হেফাজত নেতা মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার ঘোষণা, হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উসকানীমূলক বক্তব্য এবং নারীর প্রতি চরম অপমানজনক বক্তব্য দেয়ার পরও তাকে গ্রেফতার করা হয় না। বরং ওই মৌলবাদী হেফাজতকে পৃষ্ঠপোষকতাদেয় মুক্তিযুুদ্ধের কথিত চেতনার ধারক দাবিদার বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার, এমনকি তাদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রী কওমী জননী উপাধি গ্রহণ করে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, একদিকে সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আদিবাসীদের উপর নির্যাতন, সম্পত্তি দখল চলছে। স্বাধীনতাত্তোর শাসক শ্রেণি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করায় আমাদের দেশ এই পরিণতির দিকে যাচ্ছে। আজকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা শোষণমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক মানুষকে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাড়াঁতে হবে।