নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : সীতাকুন্ডে বি.এম. কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক মৃত্যু এবং চার শতাধিক আহত হওয়ার জন্য দায়ীদের গ্রেপ্তার, বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসুচীর অংশ হিসাবে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ
জেলার উদ্যোগে সোমবার ৬ জুন বিকাল ৫ টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনাওে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি
আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সহসভাপতি এম এ মিল্টন, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ
সম্পাদক এম এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মালিক কর্তৃপক্ষের দ্বায়িত্বহীনতার কারণে
সীতাকুন্ডের বি.এম কনটেইনার ডিপোয় অগ্নিকান্ড এবং বিস্ফোরণে উদ্ধারকর্মীসহ অর্ধশতাধিক মৃত্যু এবং চার শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী আহত হওয়ার ঘটনায় কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাহীনতার চিত্রটি আবার দেশবাসীর সামনে ফুটে উঠেছে। ১৯৯০ সালে সারাকা গার্মেন্টস থেকে কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুর যে মিছিল শুরু হয়েছে শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অত্যাধিক মুনাফালিপ্সা, রাষ্ট্রের মালিক তোষণ নীতি, এবং আইন বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের কর্তব্য অবহেলা আর দুর্নীতির কারণে প্রাণহানির সেই মিছিল আর থামছে না। জীবিকার জন্য এসে হাজার-হাজার শ্রমিকের জীবন হারানোর কারণে কোনো মালিক বা সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে শাস্তি পেতে হয়নি। একটি পরিবারের স্বপ্নকে পুড়িয়ে দিয়েও মাত্র সামান্য কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়ে মালিক দায় থেকে অব্যহতি পাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি আর শিল্পের উন্নয়নের জন্য সকল ধরণের পণ্যের দাম বেড়েছে শুধু
শ্রমিকের শ্রম আর জীবনের দাম বাড়েনি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বি.এম. কনটেইনার ডিপোর মালিক কর্তৃপক্ষ একদিকে কেমিক্যাল মজুদ করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা আয়োজন করেননি, অপরদিকে তথ্য গোপন করেছেন ফলে কনটেইনার বিস্ফোরণে এই মৃত্যুর জন্য অবশ্যই মালিক কর্তৃপক্ষ দায়ী। আর ঠিকাদারি প্রথা
বা আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে শ্রমিক নিযুক্ত করায় এই শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা প্রশ্নে দরকষাকষির সুযোগ ছিল না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপুরণ সংশ্লিষ্ট আই.এল.ও কনভেনশনসমূহ অনুস্বাক্ষর করেনি যা নিরাপদ
কর্মক্ষেত্র বা কর্মপরিবেশ নিরাপদ করার জন্য সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা যায়।
নেতৃবৃন্দ বি.এম. কনটেইনার ডিপোয় বিস্ফোরনে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ অনুসারে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং আহত প্রত্যেককে সুচিকিৎসা, ক্ষতিপুরণ এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান। কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ ও ১৫৫ এর আলোকে ক্ষতিপুরণের বিধান রেখে শ্রম আইন সংশোধন করার দাবি
জানান।
নেতৃবৃন্দ মিরপুরে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর নিপীড়ন বন্ধ করে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া, ফকির ফ্যাশন লিঃ এর শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুর্নবহাল, বেকা ও কুংতন গার্মেন্টস শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, বোনাস ও আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধ এবং অবিলম্বে নিত্যপণ্যের বাজারমূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গার্মেন্টসসহ সকল শ্রমিক কর্মচারীকে মহার্ঘ্যভাতা প্রদানের দাবি জানান।