নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার,
আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। নরসিংদী জেলায় সংগঠিত হত্যা, মাদক, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীসহ সংগঠিত বিভিন্ন অপরাধ রুখে দিতে র্যাব-১১ অভিযান আরও জোরদার করেছে।
র্যাব-১১, সিপিএসসি, নরসিংদী কোম্পানী কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মোঃ তৌহিদুল মবিন খান এর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিউজ ব্যাংক ২৪ কে জানান, গত ২১ মে ২০২২ ইং তারিখ আনুমানিক রাত ৯টা ৫ মিনিট ঘটিকার সময় র্যাব- ১১, নরসিংদী এর একটি চৌকস অভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান
পরিচালনা করে নরসিংদী জেলার শিবপুর থানাধীন মজলিশপুর এলাকা হতে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার মামলা নং-১৪ তারিখ- ১৭/০৫/২০২২, ধারা- ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ১১(ক)/৩০ মামলার ১নং আসামী মোঃ নাজমুল হোসেন(২১), পিতা- মোঃ নজরুল ইসলাম, সাং- জুমার খুকশিয়া, ইউপি-নিশ্চিন্তপুর, থানা-কাজিপুর, জেলা- সিরাজগঞ্জ’কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ০২টি মোবাইল ও ০২টি সীমকার্ড উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী সিরাজগঞ্জের কাজীপাড়া থানায় বসবাসকারী মিম খাতুনের সাথে এক মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে এজহারে সূত্র মোতাবেক জানা যায়, বিবাহের কয়েক দিনের মাথায়ই মিম খাতুনের স্বামী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন যৌতুকের জন্য তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালাত । এক পর্যায়ে যৌতুকের
দাবিতে খুন হওয়া মিম খাতুন তার শ্বশুরপক্ষের দাবীকৃত যৌতুকের এক লক্ষ টাকা চেয়ে বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়। কিন্তু মিমের বাবা একজন গরীব কৃষক বিধায় তার পক্ষে যৌতুকের টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিহতের বাবা-মা এই এক লক্ষ টাকা প্রদানে অক্ষমতার কথা জানালে সেটিই মিমের জীবনে কাল হয় দাঁড়ায়।
পরবর্তীতে ০৬ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মাত্র এক লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য মিম খাতুন’কে, তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাত পা চেপে ধরে, মুখে বালিশ চেপে এবং পরবর্তীতে গলায় ওড়না পেচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যাকান্ডে পর প্রাথমিকভাবে মিম খাতুনের শ্বশুর পক্ষের লোকজন উক্ত ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তা আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের হস্তক্ষেপে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ০৯ জনের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য হত্যা মামলা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের কাছ থেকে জানা যায় হত্যাকান্ডের পর মৃতার স্বামী এবং মামলার প্রধান আসামি তার কিছু বন্ধুর সাথে নরসিংদীতে পালিয়ে এসেছে। যার ফলশ্রুতিতে র্যাব উক্ত আসামীকে ধরতে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। ১৭ মে ২০২২ তারিখে মামলা হওয়ার পর ২১ মে ২০২২ তারিখে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে
গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থার জন্য সিরাগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।