নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট নেট : মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ-সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধ, করোনাকলীন সময়ে ছাত্রদের বাসাভাড়া, মেসভাড়া ও স্কুল কলেজের এক বছরের বেতন-ফি মওকুফ করা, স্কুল কলেজের শিক্ষকদের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্দ্যেগে বিশেষ বরাদ্ধ ও নারায়ণগঞ্জে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বন্দর উপজেলার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ বন্দর প্রেস ক্লাবের সামনে রবিবার ২০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টায় মনববন্ধন ও পরর্বতীতে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বন্ধর উপজেলার আহ্বায়ক মুন্নি সরদার । বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সুলতানা আক্তার, বন্ধর উপজেলার সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান রবিন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম পাঠাগারের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার মুক্তা, সদস্য নুসরাত জাহান নিঝুম, সানজিদা আক্তার সহ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষার সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছিল মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজিউল্লাহসহ নাম না জানা আরও অনেকে। সেই থেকে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ এই দিনটাকে শিক্ষা দিবস হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে পালন করে আসছে। ৫৮ বছর পরেও এসে স্বাধীনদেশের শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষাসংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রণীত বিভিন্ন সময়ে শিক্ষানীতি পর্যলোচনা করলে এ চিত্র দেখা যাবে। ১৯৭২ সালের ড. কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষানীতি প্রণীত হয়। সেই শিক্ষানীতিও ছিলো বৈষম্যের।
পরর্বতীতে যত শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে সকল শিক্ষানীতির মূল কথা ছিলোা ‘ টাকা যার শিক্ষা তার’। শিক্ষানীতির শুরুতে কিছু ভালো কথা থাকলেও শিক্ষা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি একই থেকে যায়। সেখানেও শিক্ষা সম্পর্কিত বক্তব্য ছিল ’শিল্পে মূলধন বিনিয়োগকে আমরা যে নজরে দেখি অনেকটা সেই নজরে শিক্ষা বাবদ অর্থ ব্যয়কে দেখার যৌক্তিকতা প্রতীয়মান হয়। মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষা সম্পর্কে আমরা সুপারিশ করি যে, এর ব্যয়ের শতকরা ৫০ ভাগ ছাত্র বেতন হতে আদায় করা হোক এবং অন্যান্য উৎস থেকে যা পাওয়া যাবে তাসহ সরকার বাকি ৫০ ভাগ বহন করুক।’ অর্থাৎ শিক্ষাকে ক্রমাগত ব্যয় বহুল ও সংকুচিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই শিক্ষানীতি তৈরী করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষা সংকোচনের এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয়, যার ধারাবাহিকতা এখনও বিদ্যমান। এর সাথে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে শিক্ষা বাণিজ্যের নতুন নতুন নমুনা।
দেশের উচ্চ শিক্ষার প্রধান স্তর – মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার খরচ বেড়েই চলেছে। যেখানে সাধারণ মানুষের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আরেকদিকে করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ধ্বংসের মুখে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের কোন ধরনের উদ্যোগ নেই। অন্যদিকে করোনার এই সময়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে আমাদের দেশের শিক্ষকরা। তাই সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মনে করে করোনার এই পরিস্থিতে রাষ্ট্রীয় উদ্দ্যগে শিক্ষকদের জন্য বিশেষ বরাদ্ধ দেওয়া প্রয়োজন ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এই সংকটে ছাত্রদের বাসা ভাড়া, মেস ভাড়া ও স্কুল কলেজের এক বছরে বেতন ফি মওকুফ করতে হবে । নারায়ণগেঞ্জ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নেতৃবৃন্দ একই সাথে দাবি করেন করোনার এই সময়ে শিক্ষকদের জন্য রাষ্ট্রী উদ্দ্যগে বিশেষ বরাদ্ধের ব্যাবস্থা করতে হবে।