7 Agrohayon 1431 বঙ্গাব্দ ০৯-১২-২০২২
Home / আন্তর্জাতিক / বিদ্রোহীদের হামলা- ভারতে পালাল মিয়ানমারের ৬০০ সেনা

বিদ্রোহীদের হামলা- ভারতে পালাল মিয়ানমারের ৬০০ সেনা

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : মিয়ানমারের বিদ্রোহী সশস্ত্র বাহিনী এবং জান্তা সরকারের মধ্যে সংঘর্ষের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে গত কয়েকদিনে বিদ্রোহীদের তাড়া খেয়ে ভারতের মিজোরামে মিয়ানমারের ৬০০ সেনা ঢুকেছে। তাদেরকে দ্রুত ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ করেছে মিজোরাম সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘর্ষের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রায় ৬০০ সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছে। ভারত সরকারের সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জান্তা বাহিনীর ক্যাম্পগুলো দখল করায় জান্তা সদস্যরা মিজোরামের লংটলাই জেলায় আশ্রয় নিয়েছে। তাদের আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের জান্তা সদস্যদের আশ্রয় নেওয়ার ফলে রাজ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং অঞ্চলটির স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা।

তিনি বলেন, ‘মানুষ মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে আসছে, এবং আমরা মানবিক কারণে তাদের সাহায্য করছি। মিয়ানমারের সৈন্যরা আসছে, আশ্রয় খুঁজছে। আগে আমরা তাদের আকাশপথে ফেরত পাঠাতাম। প্রায় ৪৫০ সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’

সম্প্রতি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাত থেকে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এবং ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর পালেতোয়া দখল নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এই গোষ্ঠীর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানানো হয়েছে, সমগ্র পালেতোয়া এলাকায় সামরিক বাহিনীর আর একটি ক্যাম্পও অবশিষ্ট নেই।

আরাকান আর্মি কারা

মিয়ানমারের অনেকগুলো জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আছে। আরাকান আর্মি বা এএ এদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নতুন কিন্তু সমরাস্ত্রের দিক থেকে সবচেয়ে সুসজ্জিত বাহিনী তাদের। সেনাবাহিনীর সাথে তারা গত কয়েক বছর ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে এবং এই সময়ে রাখাইন রাজ্য ও পার্শ্ববর্তী চিন রাজ্যে নিজেদের অবস্থানকে সংহত করতে সমর্থ হয়েছে।

এমনকি সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের আগে থেকেই রাখাইনে তাদের ভিত মজবুত ছিলো। দুই বছর আগে তারা দাবি করে, রাজ্যটির ৬০ শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে।

কিন্তু, সেনা অভ্যুত্থানের সময় তারা যুদ্ধবিরতিতে ছিলো। আর সেনাবাহিনীও তাদের সাথে সংঘাতে যায়নি যাতে অন্য বিরোধীদের দমন করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে পারে।

গত অক্টোবরে আরাকান আর্মি সামরিক বাহিনী বিরোধী সশস্ত্র জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অংশ হিসেবে ব্যাপকতর লড়াইয়ে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেয়। তারা ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্যে চাপে থাকা সেনাবাহিনীর ওপর সিরিজ আক্রমণ শুরু করে। এরপর গত ১১ সপ্তাহে চীনের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন অংশে জোটের হাতে পর্যুদস্ত হয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

সর্বশেষ গত শনিবার দেশের আারেকপ্রান্তে ভারত-ঘেঁষা পালেতোয়া শহরের মিওয়া ঘাঁটির শেষ সেনাচৌকিটি দখলে নেয় এএ। ২০২০ সালে একবার এই ঘাঁটিই ৪২ দিনের টানা লড়াইয়ের পর দখল করতে ব্যর্থ হয় তারা।

আরাকান আর্মি কী চায়

তবে, আরাকান আর্মির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা নিজেদের অর্জনকে আরও পোক্ত করতে পারে এবং আরও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারে। তাদের ঘোষিত লক্ষ্য, ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে একরকম স্বাধীনতা বা স্বায়ত্তশাসন।

সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে, যেটি সামরিক শাসনের বদলে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই সবচেয়ে ভালোভাবে অর্জন করা যাবে বলে তারা এখন মনে করছে বলে ধারণা পাওয়া যায়।

জান্তা আবার তার বাহিনীকে উদ্বুদ্ধ করে বহুমুখী আক্রমণের বিপরীতে লড়াই চালিয়ে যেতে কতটা উদ্যোগী হতে পারে সেটিই পালেতোয়ার পতনের পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে।

সূত্র- এনডিটিভি এবং সমকালের

আরও পড়ুন...

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনে ৫ সাংবাদিক নিহত

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ সাংবাদিকসহ …