নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী’র মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ শহরের শীতলক্ষ্যা নদীর ৫নং খেয়াঘাটে দেবী দূর্গার প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার ৫ অক্টোবর দিবাগত সন্ধ্যা ৭ টায় নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী লক্ষ্মী নারায়ণ আখড়া মন্দির থেকে আগত প্রতিমা প্রথম বির্সজনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বির্সজন শুরু হয়।
রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক তারাপদ আচার্য বলেন, আমরা এসেছি মাকে বির্সজন দিতে। আজকে মাকে বির্সজন দিলাম যাতে মা আগামী বছর আবার আসে আমাদের সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে। এরপর একে একে দেওভোগ জিউর আখড়া, রামকৃষ্ণ মিশন, আমলাপাড়া, পালপাড়া, সাহাপাড়া, মিনাবাজার, নিতাইগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা নিয়ে আসা সারি সারি ট্রাক থেকে পর্যায়ক্রমে সেগুলো ৫নং খেয়াঘাটের শীতলক্ষ্যা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে ৫ নং খেয়াঘাট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় দেখা গেছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান জানায়, সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য আমরা এখানে এই প্রথম একটা নৌ পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছি। আশা করি প্রতিমা বিসর্জনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন কেউ হবে না। সবাই সুষ্ঠভাবে প্রতিমা বিসর্জন করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিমা বির্সজন দিতে গিয়ে যাতে কোনোরকম দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য আমরা বৃদ্ধ, শিশু, ও মহিলাদের নৌকায় উঠতে দিচ্ছি না। এখনে পূজা উদযাপন কমিটি আছে তারা যাদের সিলেক্ট করছে তারাই কেবল নৌকায় উঠে প্রতিমা বির্সজন দিতে পারবেন।
এ ছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতার জন্য নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উপস্থিতি দেখা গেছে। এছাড়াও প্রতিমা বির্সজনের সময় শীতলক্ষ্যা নদীতে বাংলাদেশ নৌ পুলিশের জলযান নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি স্প্রীড বোড দিয়ে প্রতিমা বির্সজনের ঘাটসহ আশপাস এলাকা টহল দিতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, প্রতিমা বির্সজন উপলক্ষে আইন শৃংখলা বাহিনি যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে আমরা খুশি। আজকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বেশিরভাগ প্রতিমা এখানে বির্সজন হবে। সব মিলিয়ে ৪২টি মন্দির থেকে এখানে প্রতিমা নিয়ে আসা হবে বির্সজনের জন্য। আমরা আমাদের কমিটির মাধ্যমে এই বির্সজন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন এর সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-অঞ্চল) নাজমুল হাসান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক সাহা, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুন কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।