নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট নেট : নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার তিনগাও এলাকায় একটি মার্কেটে বিগত কিছুদিন পূর্বে আগুন লেগে প্রায় ৪টি দোকান, মালামাল এবং নগদ টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনে বুকফাটা বিলাপ করে এক ভদ্র মহিলা বলেন, মার্কেটে আগুনে আমার দোকান পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাল পুড়ে গেছে। দোকানের চাল, ডাল, তেল, আটা, লবণসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য যা ছিলো সবই পুড়েছে। আগুন আমার সব শেষ করে দিল। কিভাবে কী করব বুঝতে পারছি না।
অপর দোকানদার বলেন, তার দোকানের মধ্যে দুটি ফ্রিজ সহ সকল মালামাল ও টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এদিকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হওয়া তেলের (পেট্রোল, ডিজেল, মবিল) দোকানটি শফীউল্লাহ পূনরায় নতুন করে তুলেছে । কিন্তু পথে বসেছে আগুনে পুড়ে ভস্ম হওয়া পাশের দোকানীরা। তাদের জীবন যাপন করার একমাত্র আয়ের উৎস ছিলো এই দোকানের ব্যবসায়। যা আগুনে শেষ করলো। পাশে থাকা ওই অবৈধ তেলের দোকান থেকে লাগা দাউ দাউ আগুনে নিঃস্ব ব্যবসায়ীদের কান্না আর আহাজারিতে থমকে গেছে সব। ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ডে নিঃস্ব হয়েছে ব্যবসায়ীরা। সে ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে কোনো উপায় খুজে পাচ্ছে না তারা। স্থানীয় দোকান মালিকদের কে বিষয়টি দোকানিরা জানায় তবে তারা কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। এতে নিঃস্ব দোকানিকে হুমকী দেয়া হচ্ছে।
দোকানের ভাড়া বাবদ আয় দিয়ে সংসার চালানো এক দোকান মালিক বলেন, আমার স্বামী এখানে দোকান দেয়ার মাধ্যমে আমার বাকি জীবন এই দোকান ভাড়ার আয় দিয়ে চালানোর একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো। আমার স্বামী নেই আর কোনো ছেলে সন্তানও নেই। এই দোকানই একমাত্র আয়ের উৎস যার মাধ্যমে জীবন যাপন করতাম। এখন তো আমার সবই গেলো। আর নতুন করে দোকান তোলার মতো সামর্থ আমার নেই। এর মধ্যে কোনো সহায়তা পাচ্ছি না ফলে পথে বসা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নাই।
জানা যায়, অবৈধ পেট্রোলের দোকানে চলতো নানা ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ। দোকানের নিচে ইয়াবা, গাঁজা মাদক সেবন চলে নিয়মিত। দোকানের মালিক কয়েকবার নিষেধ করলেও তারা তা উপেক্ষা করে এসব অবৈধ কাজ করছে স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে।
স্থানীয় প্রসাশন সমস্ত ক্ষতি পূরণ স্থানীয় সাংসদের সাথে আলোচনা করে দেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু ওই পর্যন্তই শেষ তার কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এই ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা কীভাবে সংসার চালায়, কীভাবে দিন কাটাচ্ছে, তারা খেয়ে না খেয়ে যে কষ্টের জীবন যাপন করছে তা কারও নজরে পড়ছে না। কেউ সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে না। ফলে তাদের না খেয়ে মরার উপক্রম। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছেন। তারা বলছেন, আগুনের পর তারা সরকারি সহায়তা পাননি। আগুন তাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।