নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : ফরিদপুর শহরে শিশুখাদ্য হিসেবে ফলের জুস তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। তবে সেই ফলের জুসে কোনো ফল নয় বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল ও রং দিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল এসব জুস।
শহরে এমন একটি ভেজাল জুস কারখানায় অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের টের পেয়ে পালিয়ে যায় ওই কারখানার মালিক মো. লিটন মিয়া । এসময় জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ভেজাল জুস। পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কারখানাটি।
শনিবার (৪ মে) বিকেলে ফরিদপুর পৌরসভার মাহমুদপুর এলাকার ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের পাশে মৃত মো. নাছিরুজ্জামানের বাড়িতে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালাণ জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, মাহমুদপুর এলাকার মৃত মো. নাছিরুজ্জামানের বাড়ির বাইরে থেকে ভেজাল জুস কারখানার কিছুই বোঝার উপায় নেই। দরজা-জানালা বন্ধ করে বাড়ির ভেতরে কয়েকটি রুমের ভিতরে বসানো হয়েছে মেশিন। সেখানেই চলছিল বিষাক্ত কেমিক্যাল ও বিভিন্ন রং ব্যবহার করে জুস তৈরি। এ সময় একই বাড়িতে অন্য ঘরে অবৈধভাবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করায় একটি কারখানও পাওয়া যায়। সেখানে তাদের ল্যাবসহ রয়েছে বোতলাজাত ও প্যাকেজিংয়ের ব্যবস্থা।
অভিযান চলাকালে দেখা যায়, কারখানাটিতে কয়েকজন নারী শ্রমিক কাজ করছেন। তারা বোতলে জুস ভরছেন, কেউবা প্যাকেজিং করছেন। নোংরা পরিবেশে বিষাক্ত ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুস। জুসের বোতলে বিভিন্ন নামি-দামী কোম্পানির লেভেল লাগানো হচ্ছে। লিচু, ম্যাংগো জুস ছাড়াও চকলেট প্যাকেট করা হচ্ছে। পাশাপাশি আয়ুর্বেদিক অ্যালকুলিসহ বিভিন্ন ওষুধও বোতলজাত করা হচ্ছে।
কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা জানান, তারা সকালে আসেন, রাতে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর রাতে তৈরি করা হয় জুস, সকালে এসে তারা বোতলজাত করেন।
অভিযানের নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুজিবুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো করা হয়। বিপুল পরিমাণ নকল জুস জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া আয়ুর্বেদিক অ্যালকুলিসহ বিভিন্ন ধরনের চকলেট জব্দ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে জব্দ মালামাল। এছাড়া কিছু মেশিন রয়েছে সেগুলোও জব্দ করা হয়েছে। কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানার মালিক লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়া অবৈধভাবে আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি করায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আদালত পরিচালনায় সহায়তা করেন ফরিদপুর জেলা এনএসআই উপপরিচালক তৈয়েবুল মাওলা, এনএসআই ফিল্ড অফিসার মো. আনোয়ারুজ্জামান, জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ ও পুলিশের একটি দল।