নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : ভূমিদস্যু ও বনদস্যুদের হাত থেকে পাহাড়ের মাটি রক্ষা করতে গিয়ে ডাম্পার ট্রাক চাপায় মারা গেছেন এক বিট কর্মকর্তা। রোববার (৩১ মার্চ) ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বন কর্মকর্তার নাম সাজ্জাদুজ্জামান (৩০)।তিনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। সাজ্জাদুজ্জামান মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।
জানা যায়, সংরক্ষিত বনে পাহাড় কেটে মিনি ট্রাক (ডাম্পার) ট্রাকভর্তি করে মাটি পাচার করছিল কতিপয় বনদস্যু। খবর পেয়ে গভীর রাতে অভিযান নেমে প্রাণ হারিয়েছেন কক্সবাজারের উখিয়ায় বনবিভাগের এই বিট কর্মকর্তা। পাহাড় খেকোদের ব্যবহৃত ডাম্পারের চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গভীর রাতে উখিয়ার হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে ডাম্পার করে মাটি পাচার করা হচ্ছিল। এ সময় মোটরসাইকেলে করে সাজ্জাদ ঘটনাস্থলে গেলে ডাম্পারটি তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তার সঙ্গে থাকা বনরক্ষী মোহাম্মদ আলীকে (২৭) আহত অবস্থা উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান, নিহত সাজ্জাদুজ্জামানের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসাইন বলেন, ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সারোয়ার আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি জানান, ‘বন রক্ষা করতে গিয়ে সাজ্জাদ নিজের জীবন দিয়েছেন। তার নির্মম মৃত্যুতে আমরা একজন দক্ষ ও পরিশ্রমী বনকর্মকর্তাকে হারালাম।
পাহাড় খেকোদের প্রতিরোধে এই মুহূর্তে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে ডিএফও বলেন, ‘না হয় অচিরেই বন ধ্বংস হয়ে পড়বে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার পক্ষ থেকে পরিকল্পিতভাবে বিট কর্মকর্তাকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একইসাথে অবৈধ ডাম্পার মালিককে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি রইল।
একই সাথে জেলা বাপা নেতৃবৃন্দ মনে করে অবৈধ ডাম্পার গুলোর দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে বন বিভাগ থেকে শুরু করে জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসনের আরো কঠিন ভূমিকা নেওয়া উচিত।