নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকার দাবিতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁদমারী থেকে তিন বছর বয়সী শিশু আব্দুর রহমানকে অপহরণের ঘটনায় সৎ দাদিসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো অপহৃত শিশুটির সৎ দাদি মমতাজ বেগম (৫৬) ও তার স্বামী জামালপুর জেলার মেলাহন্দ থানার কাউয়া বাড়ীর মোঃ হাবিবুর রহমানের পুত্র ফজলু (৪৬)। এর আগে ৮ মে দুপুরে অপহৃত শিশুটির পিতা রবিন বাদী হয়ে তার সৎ মা মমতাজ বেগমসহ (৫৬) অজ্ঞাত নামা আরো ২-৩ জন কে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। রাতে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জামালপুর জেলার মেলাহন্দ থানা পুলিশের সহায়তায় কাউটা বাইদ এলাকাস্থ ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করে অপহৃত শিশু আব্দুর রহমানকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ ফারুক হোসেন জানান, শিশুটির সৎ দাদী গ্রেফতারকৃত মমতাজ বেগম মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে শিশু আব্দুর রহমানকে অপহরণ করে তার বাবা মায়ের নিকট ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। অন্যথায় তাকে ভারতে নিয়ে যাবে বলে হুমকি প্রদান করে। অভিযোগ পেয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জামালপুর মেলাহন্দ থানা পুলিশের সহায়তায় ফতুল্লা থানা পুলিশ বুধবার রাতে শিশুটিকে একটি ধান ক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করে। তবে সে সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় অপহরণকারীরা।
পরবর্তীতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চৌধুরী বাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মমতাজ বেগম ও তার পূর্বের স্বামী ফজলুকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মমতাজ বেগম পুলিশের নিকট স্বীকার করে যে, শিশুটিকে অপহরণ করে প্রথমে রিক্সাযোগে ঢাকার ধলপুর এলাকায় যায়। সেখানে গিয়ে তার পূর্বের স্বামী ফজলুকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুরের মেলাহন্দে চলে যায়। এরই মধ্যে অপহৃত শিশুটির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না পেলে শিশুটিকে ভারতে নিয়ে যাবে। শিশুটির বাবা মা দুই লাখ টাকা প্রদান করার কথা স্বীকার করলে তারা মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। পরে তারা পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চাইলে গ্রেফতারকৃত ফজলুর বোন শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার কথা বললে তারা শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যায়।
এসআই ফারুক আরো জানান, গ্রেফতারকৃত মমতাজ বেগম ভারতের বাসীন্দা। তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। তার পূর্বের স্বামীকে নিয়েই তিনি এ অপহরণের পরিকল্পনা করেন।
অপহৃত শিশুটির বাবা ও মামলার বাদী রবিন জানায়, তার বাবা ছয় মাস পূর্বে মামলার এজাহারনামীয় আসামী মমতাজ বেগমকে বিয়ে করে। তার সৎ মা শিশু সন্তানটিকে আদর করতেন। গত ৭ মে সকালে তারা স্বামী স্ত্রী উভয়েই নিজ নিজ কমস্থলে চলে গেলে শিশুটিকে প্রতিদিনের ন্যায় তার সৎ মায়ের নিকট রেখে যায়। পরে বেলা ১২ টার দিকে রবিনের বাবা তার স্ত্রী আখিকে জানায়, শিশু সহ তার বাদীর সৎ মা সকাল নয়টার সময় বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। তখন বাদী তার সৎ মায়ের নাম্বারে ফোন করলে তা রিসিভ করছিলোনা। এক পর্যায়ে বাদীর সৎ মা বাদীকে ফোন করে ফোন করে ১০ লাখ টাকা দাবী করে অন্যথায় শিশুটিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করে দিবে বলে হুমকী দেয়।