নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : একতরফা নির্বাচনী তফসিল বাতিল, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ও পিঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে বুধবার বিকাল ৪ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক হাফিজুর ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাসদ নেতা এস এম কাদির, সিপিবি নেতা দুলাল সাহা, লোকনাথ বর্মন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সরকার চরম ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। বিরোধী নেতা কর্মীদের গ্রেফতার, হামলা, মামলা দিয়ে দেশে একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছে বর্তমান আওয়ামী সরকার। জনমত উপেক্ষা করে সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে। নির্বাচনে দেশে ক্রিয়াশীল প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনে না যাওয়ায় এবারের নির্বাচন সরকারের সুবিধাভোগী কিছু দলের ভাগাভাগির নির্বাচনে পরিনত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে ১১ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ৭ টি দলীয় ও ৪ টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৪ টি নির্বাচনে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে। দলীয় সরকারের অধীনে প্রত্যেকটি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ কারচুপীর নির্বাচন হয়েছে। গত দুটি নির্বাচনে ভোটারবিহীন ও দিনের ভোট রাতে করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচনে তার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। সেজন্য তারা দলীয় সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে এবং এইভাবেই সমস্ত আয়োজন করছে। বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করা, একতরফা তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন করাÑএখন দেশের জনগনের দাবি। সরকার একতরফা নির্বাচনের কার্যক্রম পরিচালনা করে বাস্তবে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে পিঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে দ্বিগুন হয়ে যায়। সি-িকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে নিত্যপণ্যের দাম কেবল বাড়ছেই। অল্প কিছু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী জনগণের পকেট কেটে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার এক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। বাস্তবে গণবিচ্ছিন্ন সরকার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ, ব্যাংকখেলাপি, বিদেশে টাকা পাচারকারীদের অবাধ লুণ্ঠনের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে এদের বদান্যতায় ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।