নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট নেট : দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শহর বরগুনা জেলার উপকুলীয় উপজেলা হিসেবে পরিচিত আমতলীতে শনিবার সন্ধ্যায় তুমুল বৃষ্টিতে অন্তত অর্ধ কোটি কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মোট ২৩ টি ইট ভাটায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন ইট ভাটার মালিকরা। করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে এই সময়ে বৃষ্টির ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে না বলে দাবী করেন ইটভাটার মালিকরা। দ্রুত তারা সরকারের কাছে সহায়তার দাবী করেছেন।
জানাগেছে, গতকাল ৪ই এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় উপকুলীয় আমতলী উপজেলায় তুমুল বৃষ্টি হয়। প্রায় আধা ঘন্টা তুমুল বৃষ্টিতে উপজেলার ২৩ টি ইটভাটার অন্তত অর্ধ কোটি কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন ইটভাটার মালিকরা। নষ্ট ইট অপসারনে সমস্যা হওয়ায় অনেক ইটভাটা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ফলে বিপাকে পরেছে ইটভাটার মালিকরা। নষ্ট ইট অপসারন না করা পর্যন্ত নতুন ইট তৈরি করা যাবে না।
ইটভাটার মালিকরা জানান, দুইভাবেই ইটভাটার মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একদিকে কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে অন্যদিকে নষ্ট ইট অপসরনে টাকার প্রয়োজন। তারা আরো জানান, বৃষ্টির কারনে সময়ের পনের দিন পূর্বেই ইট পোড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে। আর তেমন ইট পোড়াতে পারবো না।
রবিবার ৫ই এপ্রিল সরেজমিনে জিমি, সাউথ, কেএবি, আরএএবি, সাগর , আকন, মুন্সি, ঢাকা, মা, আরএনটি, এএটি, এনবিএম ও তৌহিদ ইটভাটা ঘুরে দেখা গেছে, তুমুল বৃষ্টিতে কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে এবং দলা হয়ে কাঁদায় পরিনত হয়েছে। ইট নষ্ট হওয়ায় ভাটার মালিকরা হতাশ হয়ে পরেছেন।
কেএবি ইট ভাটার মালিক হাসান মৃধা বলেন, দুই লক্ষ কাঁচা ইট বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে। তিনি আরো বলেন, বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়া ইট অপসরনে অনেক টাকার প্রয়োজন হবে। দুই ভাবে আমি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছি।
আরএএবি ইটভাটার মালিক মোঃ হারুন আর রশিদ আকন বলেন, দের লক্ষ কাচা ইট নষ্ট হয়েছে। বৃষ্টিতে নষ্ট ইট অপসারন, এক সপ্তাহ ১’শ৫০ জন শ্রমিকের কাজ বন্ধ ও নতুন ইট তৈরি বন্ধসহ সব মিলিয়ে অন্তত বিশ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সাউথ ইটভাটার ম্যানেজার মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা এ বছর পুষিয়ে উঠা যাবে না। তিনি আরো বলেন, অন্তত দের লক্ষ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের এনবিএম ইটভাটার মালিক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এ্যাড.নুরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে অন্তত পাঁচ লক্ষ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে এতে ক্ষতির পরিমান প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা।
আমতলী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, উপজেলার ২৩টি ইটভাটায় অন্তত অর্ধ কোটি কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫ কোটি টাকা। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সরকারের কাছে সহায়তার দাবী জানাই।
আমতলী ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মোঃ নাজমুল আহসান নান্নু বলেন, বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠা সম্ভব না। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগীতা প্রয়োজন। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের কাছে সল্প সুদে ঋণ পাওয়ার দাবী জানাই।