নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও নারী মুক্তির আন্দোলনের সংগ্রামী নেত্রী বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি হেনা দাসের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সমাধিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও সাংস্কৃতিক জোটের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
সোমবার ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ বিকেল ৪ টায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা আন্দোলন, নারী মুক্তির আন্দোলনের সংগ্রামী নেত্রী বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি হেনা দাসের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদ ও সাংস্কৃতিক জোটের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভা আলী আহম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ মহিলা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী। সকাল নয়টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা: ফওজিয়া মোসলেম, হেনা দাসের কন্যা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: দীপা ইসলাম ও নাতনী প্রকৌশলী নবনীতা চৌধুরী, সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তীসহ জেলার নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠন তাঁর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সম্মানিত মেয়র ডা: সেলিনা হায়াৎ আইভী। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধের ট্রাস্টি মফিদুল হক। বক্তব্য প্রদান করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ, শিক্ষক (কামরুজ্জামান) সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট হাসিনা পারভীন, প্রকৌশলী নবনীতা চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন- হেনা দাস মানব মুক্তি সংগ্রামে এক জীবন্ত কিংবদন্তি। ১৯২৪ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি সিলেটের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৫২ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ, চা শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন সময় তিনি আত্মগোপন, জেল-জুলুম ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে জড়িত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জে তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ মহিলা পরিষদের প্রথম সভাপতি এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জে নারীদের সংগঠিত করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও তিনি অভিভাবক ছিলেন। সকলে তাঁর পরামর্শ নিতেন।আমৃত্যু তিনি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই দুঃসময়ে তার মতো নেতৃত্বের খুব প্রয়োজন, তরুণ প্রজন্মের কাছে তাঁর কর্ম পৌঁছে দিতে হবে। তবে সমাজ আলোকিত হবে। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। শেষে বিপ্লবী হেনা দাসের জীবনী নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে সকালে ফুল দেওয়ার সময় সমাধিতে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডাক্তার ফৌজিয়া মোসলেম, কেন্দ্রীয় সাধারণসম্পাদক ডাক্তার মালেকা বানু, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও জেলার সভাপতি বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি রিনা আহমেদ, সহ-সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক এডহাসিনা পারভীন, লিগ্যাল এইড সম্পাদক শাহানারা বেগম, আন্দোলন সম্পাদক শোভা সাহা, সদস্য রাশিদা বেগম, ডা. দীপা ইসলাম ও তার মেয়ে প্রকৌশলী নবনীতা চৌধুরী, শহর কমিটির সংগঠন সম্পাদক নীলা আহমেদ, শহর কমিটির প্রচার সম্পাদক পল্লবী প্রত্যাশা, শহর কমিটির সদস্য নুসরাত নুপুর, অফিস সহকারী সুমি সরকার প্রমুখ।