7 Boishakh 1432 বঙ্গাব্দ ০৯-১২-২০২২
Home / খবর / সিদ্ধিরগঞ্জে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের এ মানববন্ধন দূর্ণীতিবাজ বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষককে আমরা চাই না

সিদ্ধিরগঞ্জে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের এ মানববন্ধন দূর্ণীতিবাজ বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষককে আমরা চাই না

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মার্চেন্ট ওয়ারর্কারস (এমডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক
গাজী নাজমুল হুদাকে পুনঃরায় বহালের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা।

বৃহস্পতিবার ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অত্র বিদ্যালয়ের সামনে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করে।

মানববন্ধনে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী তৎকালিন স্কুল পরিচালনা কমিটি প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে বরখাস্ত করেন। যা মাউশির আইন শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. সিদ্দিকুর রহমান তদন্ত করে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

মার্চেন্ট ওয়ারর্কারস (এমডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রওশন আরা আক্তার বলেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে পুনঃরায় যোগদান করতে চাচ্ছেন, এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা মানববন্ধন করে।

জানা যায়, মার্চেন্ট ওয়ারর্কারস (এমডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদাকে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের
অভিযোগে মন্ত্রণালয় তদন্ত রিপোর্ট প্রেক্ষিতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর তাকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়ের উপস্থিতিতে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলে তিনি আর উপস্থিত হননি।

মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ মাউশির আইন শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. সিদ্দিকুর রহমান তদন্ত করে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন। শিক্ষা বোর্ড সভাপতি এডহক কমিটিকে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অনুসরণপূর্বক বোর্ডকে অবহিত করতে বলেন। যদিও হাইকোর্টের আদেশটি প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদার নামে না, তথাপিও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় সভাপতি যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে মর্মে অবহিত করেন।

সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর শিক্ষাবোর্ড প্রধান শিক্ষক বরখাস্তকরণ সম্পর্কিত বিষয়ে বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন কমিটিতে আবেদনের নির্দেশনা প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে বর্তমান কমিটি প্রধান শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্তের জন্য বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন কমিটিতে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র প্রেরণ করেন।

এদিকে তার বিরুদ্ধে হওয়া তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, তদন্তকালে সহযোগিতা প্রদানের জন্য তদন্তের একদিন পূর্বে অর্থাৎ ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। এছাড়া মাউশি অধিদপ্তরের মাধ্যমিক উইং থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি আদেশ মোতাবেক তদন্তকার্য পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হলে এবং অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমূল হুদাকে তদন্তের বিষয়ে জানানো হলে তিনি তাঁর অসুস্থতার কথা বলে ১৫ দিনের
সময় প্রার্থনা করেন। মাউশির আইন শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. সিদ্দিকুর রহমান সব বিষয় বিবেচনা করে তাঁকে মৌখিকভাবে ৭ দিনের সময় মঞ্জুর করে ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি তদন্তের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন।

নিরীক্ষা রিপোর্টসূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর অ্যাডহক কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে পূর্বে গঠিত নিরীক্ষা কমিটি ১৮ নভেম্বরের নিরীক্ষা রিপোর্ট
আলোচ্যসূচি-১ এ উপস্থাপন করেন। নিরীক্ষা রিপোর্টে প্রধান শিক্ষকের ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে অবহিত করলে প্রথমে প্রধান শিক্ষক তা অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করলে অর্থ আত্মসাতের কথা প্রধান শিক্ষক তা স্বীকার করেন। সরকারি বিধি মোতাবেক, প্রধান শিক্ষক সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার বেশি অর্থ হাতে রাখতে পারবেন না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন বিধি বহির্ভূতভাবে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা নিজের নিকট প্রায় এক বছর রাখলেন তার কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখের ১নং আলোচ্য সূচিতে প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং শিক্ষানবিশকালে সন্তোষজনক চাকুরীর বিধান পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।

এছাড়াও তিনি শিক্ষকদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছেন বিধায় তিনি চাকুরী থেকে বরখাস্তের মতো অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন। তিনি ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন অর্থবছরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতন ও অন্যান্য খাতে আদায়কৃত ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে যথা সময়ে জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং বিধি বহির্ভূতভাবে আদায়কৃত অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নিজের নিকট রেখে দিয়েছেন, যা চাকুরী থেকে বরখাস্ত হওয়ার মতো অপরাধ করেছেন। এছাড়া তিনি ২০১০ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি অনুমোদিতভাবে বিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত থেকেছেন, যা চাকুরী থেকে বরখাস্ত হওয়ার মতো অপরাধ করেছেন। এছাড়াও তিনি করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া ও জমা নেওয়া ও নতুন বছরের শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম, বই বিতরণ, মুজিববর্ষ উদ্যাপনে অবহেলা করে বিঘ্ধসন সৃষ্টি করেছেন।

মাউশির আইন শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, মার্চেন্ট ওয়ারর্কারস (এমডব্লিউ) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত। তিনি ব্যক্তিগত লাভ ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিদ্যালয়ের কর্ম-পরিবেশের বিঘ্ধসন ঘটানোর কারণে শিক্ষক-কর্মচারীগণ সর্বসম্মতিক্রমে অনাস্থা প্রকাশসহ উল্লিখিত কারণসমূহের জন্য প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদার সাময়িক বরখাস্ত বিধি সম্মত বলে প্রতীয়মান হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

আরও পড়ুন...

সাংস্কৃতিক বিরোধ আমরা যদি মেটাতে না পারি তাহলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিরোধ মিটবে না- উপদেষ্টা ফারুকী

নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : সাংস্কৃতিক ভাবে বাংলাদেশকে আর দুই ভাগ করা যাবে না বলে …