নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ এর উদ্যোগে শহিদ শ্রমিক এনামুল স্মরণে আলোচনাসভা গত বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারী বিকাল ৫ টায় মিশনপাড়াস্থ টিইউসির জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন টিইউসির জেলার সভাপতি আব্দুল হাই শরীফ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অঞ্জন দাস, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন জেলার সাধারণ সম্পাদক এইচ রবিউল চৌধুরী, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, টিইউসি জেলার সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, টিইউসি নেতা জাকির হোসেন, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির নেতা রাশিদা আক্তার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি এসিআই কারখানায় শ্রমিকের মজুরি বৃদ্দিসহ ৬ দফা দাবির আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে কারখানার শ্রমিক এনামুলকে। আহত হয় অর্ধশত শ্রমিক। গ্রেফতার করা হয় অনেককে। মালিক ও পুলিশ এভাবে গুলি চালিয়ে আন্দোলন দমন করে। আজকে নিত্যপণ্যের দাম যখন আকাশচুম্বি কিন্তু শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে না তখন শহিদ এনামুলের আত্মত্যাগ শ্রমিকদের কাছে খুবই প্রাসঙ্গিক।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে। বেড়েছে বাড়ি ভাড়া, শিক্ষা-চিকিৎসা খরচ। দফায় দফায় বাড়ছে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম। শ্রমিকের আয় না বাড়ায় তাদের জীবনমান বাড়ছে না। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত বাংলাদেশে শ্রমিকরা মান সম্পন্ন জীবন যাপন করার মত মজুরি পাবে না এটা হতে পারে না। প্রতিটি সেক্টরে মজুরি বোর্ড গঠন করে বর্তমান বাজার দর বিবেচনা করে শ্রমিকের মান সম্পন্ন মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু সরকার এবিষয়ে কর্ণপাত করছে না।সরকার চেম্বার অব কমার্স, বিকেএমইএ, বিজেএমইএ-র স্বার্থ রক্ষা করে যাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গার্মেন্টস বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস। প্রতি বছর গার্মেন্টসের রপ্তানি আয় বাড়ছে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশের বেশি আসে গার্মেন্টস খাত থেকে। সাড়ে তিন হাজার কারখানায় ৪০ লাখ শ্রমিকের শ্রমে ঘামে এই পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি আয় হচ্ছে। ইতিমধ্যে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার অবস্থান দাঁড় করিয়েছে। অথচ আমরা দেখছি সেই গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মজুরি পৃথিবীর মধ্যে সর্বনিম্ন। ৪ বছরের অধিককাল যাবৎ এখানে মজুরি বাড়ছে না।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জাতীয় নিন্মতম মজুরি আইন, গার্মেন্টসসহ সকল সেক্টরে মজুরি বোর্ড গঠন করে মজুরি নির্ধারণ, রেশন পেনসন, আবাসন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দাবিতে শ্রমিকদের তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।