নিউজ ব্যাংক ২৪. নেট : সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বেগম রোকেয়ার ১৪২ তম জন্ম ও ৯০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মানববন্ধন করা হয়।
গত শুক্রবার ২৩/১২/২০২২ ইং বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মিমি পূজা দাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন্নাহার, দপ্তর সম্পাদক খায়রুননাহার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিউটি আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুন্নি সরদার ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন , বেগম রোকেয়া যে সময়ে জন্মগ্রহন করেছিলেন সে সময়ে সমাজ ব্যবস্থা অশিক্ষার আভিশাপ ও পুরুষতন্ত্রের অবরোধ প্রথার মধ্যে ডুবে ছিলো। সে সময়ে মেয়েদের লেখাপড়া ছিলো নিষিদ্ধ ও পাপতুল্য। ২৯ বয়ছ বয়সে বেগম রোকেয়া বিধবা হয়েছেন। বিধবা হয়ে তিনি বুঝেছিলেন সমাজে নারীর অবস্থা কতটা নিগৃহীত। এ অবস্থা থেকে নারাীর মুক্তি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে নারাী শিক্ষার জন্য লড়াই শুরু করেছিলেন। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিলো সার্বিকভাবে সমাজের অগ্রগতি। কারন তিনি বুঝেছিলেন অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে পেছনে ফেলে রেখে সমাজের অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই সে লড়াই আজো নারী মুক্তি আন্দোলনে প্রেরনা যোগায়। বেগম রোকেয়ার মৃত্যুর ৯০ বছর পর এবং স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও বাংলাদেশের আইনেই নারীর প্রতি বৈষম্য রাখা হয়েছে। পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিনিয়ত সেই বৈষম্যমূলক আচরণ নারীদের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করছে ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বাহ্যিকভাবে দেখলে দেখা যাবে দেশে নারী প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু সমাজ মননে আরো অনেক বেশি অবক্ষয় ঘটে চলছে। সারাদেশে নারী শিশু ধর্ষণ- নির্যাতন হত্যা এক ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। ঘরে বাহিরে সবর্ত্র যেকোন স্থানে দিনে রাতে যেকোন সময়ে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। বেশিভাগ ঘটনার ক্ষেত্রেই দ্রুত এবং উল্লেখযোগ্য বিচারের নজির দেখা যায় না। আবার পারিবারিক জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই নারী বৈষম্যের শিকার। সমাজে সম্পত্তির উত্তরাধিকার ক্ষেত্রেও নারীর প্রতি বৈষম্য বিরাজমান। গৃহস্থালি কাজ ছাড়া পরিবার চলেনা কিন্তু গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নাই। সমকাজে সমমজুরী আইনে থাকলেও বাস্তবে সমস্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক ঘাতে নারী পুরুষের তুলনায় কম মজুরী পেয়ে থাকে। নারীর সস্তা শ্রমকে ব্যবহার করতে মালিক শ্রেনী যতো আগ্রহী, তাদের কাছে ততোটাই উপেক্ষিত নারীর অধিকার।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নারীকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেয়ার দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের উদ্যোগ খুবই অপ্রতুল। বিজ্ঞাপন, সিনেমায় নারীকে পন্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ওয়াজ মাহফিলে নারীকে নিয়ে অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া হয়। নারীর এ সকল সংকটের মূলে রয়েছে পুরুষতান্ত্রিকতা ও পুঁজিবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থা। সমাজের সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, শোষণমূলক সমাজ ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিবর্তনে বেগম রোকেয়া আজও প্রেরণার উৎস। নারী পুরুষের মিলিত সংগ্রামে সাম্য সমাজ
প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বেগম রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম আজও পাথেয়।