নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট নেট : মরমী কবি বাউল সম্রাট লালন ফকিরের ১৩০ তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে রবিবার ২৫ অক্টোবর ২০২০ বিকেল ৪টা ৩০মিনিট ঘটিকায় ২নং রেল গেটস্থ বাসদ কার্যালয়ে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক প্রদীপ সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক ও চারণের কেন্দ্রীয় ইনচার্জ নিখিল দাস, প্রগতি লেখক সংঘ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জাকির হোসেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ , সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসাইন, চারণের সংগঠক সংগঠক জামাল হোসেন, সেলিম আলাদীন প্রমূখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৭ অক্টোবর ছিল লালন সাইজির ১৩০ তম তিরোধান দিবস। তাঁর ১১৬ বছরের জীবদ্দশায় তিনি প্রায় ১০ হাজার গান রচনা করেছিলেন। তাঁর একাডেমিক শিক্ষা ছিল না অথচ তাঁর গানের মর্মকথায় গভীর পান্ডিত্য প্রকাশ পায়। উপমা অলঙ্কার তিনি অত্যন্ত সুন্দর ভাবে প্রকাশ করেছিল। অত্যন্ত শক্তিমান কবি সম্ভার অধিকারী লালন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাহিত্যিক অন্নদা শংকর রায় লিখেছেন, ”বাংলার নবজাগরনে রাম মোহনের যে গুরুত্ব বাংলার লোকমানসের দেয়ালী উৎসবে লালনেরও সেই গুরুত্ব। দুই যমজ সন্তানের মতো তাঁদের দু’জনের জন্ম। দু’বছর আগে পরে।” তিনি অসাম্প্রদায়িকতার প্রতিক। জাত-পাত, ধর্মীয় গোঁড়ামীর বিরুদ্ধে ছিল তার লেখনী ।
আজ যখন স্বাধীনতার ৫০ বছরের দ্বার প্রান্তে পোঁছেও সাম্প্রদায়িকতার আগুনে রামু, নাসিরনগরসহ অসংখ্য জায়গায় সংখালঘু সম্পদায়সহ আদিবাসী নির্যাতিত হয়, তখন আমরা বুঝি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হারিয়ে গেছে। যেখানে হেফাজতের কথায় পাঠ্যপুস্তক থেকে বিশিষ্ট লেখকদের লেখা বাদ দেয়া হয় অথবা মৌলবাদীরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায় তখন আমাদের সামনে প্রেরণা হিসেবে আসে লালনের সৃষ্টিকর্ম।
শুধু তাই নয়, তৎকালীন সমাজের প্রজাদের উপর জমিদারদের অত্যাচারের খবর যখন কাঙ্গাল হরি নাথ তাঁর ’গ্রামবার্তা’ পত্রিকায় ছাপাতো। ফলে পরিবারের জমিদাররা পাইক পেয়াদা দিয়ে হরিনাথকে তুলে নিতে চাইলে লালন তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে লড়াই করে জমিদারদের বাহিনীকে হটিয়ে দেয়। এভাবে নির্যাতিত প্রজাদের পাশেও তিনি দাঁড়িয়েছিলেন । এ প্রেরণায় আজকে আমাদেরও সকল অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই জারী রাখতে হবে।